বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) একজন নন-কমিশনড কর্মকর্তা নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পরেও সীমান্তে থমথমে পরিস্থিতি রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সীমান্তের ওপার থেকে গোলা বর্ষণের আওয়াজ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে।
বিজিবি সূত্রেও এ খবর পাওয়া গেছে। তবে গোলা বাংলাদেশের সীমানায় এসে পড়েছে কি না সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওই সীমান্তের চাকঢালা ও আসারতলী এলাকার বাসিন্দারা বলেছে, তারা রাত পৌনে ৯টার দিকে ওপারে মিয়ানমারের সীমানায় গোলা বর্ষণের শব্দ পেয়েছে। মাহমুদ হোসেন নামের একজন জানান, অন্তত আটটি গোলার শব্দ তিনি শুনেছেন। সীমান্তের এপারে নাকি ওপারে গোলা বর্ষণ হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তের ৪৭ থেকে ৪৯ নম্বর পিলার এলাকায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গোলা বর্ষণের আওয়াজ শোনা গেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের পাশাপাশি এখনো সেনা মোতায়েন রয়েছে। এপারে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরাও সতর্ক অবস্থায় আছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত। বিজিবি সদস্যরা নিয়ম মাফিক টহলে আছেন। দেশের ভূখণ্ড রক্ষায় তাঁরা সতর্ক।
নাইক্ষ্যংছড়ির বাসিন্দা এম এ হামিদ জানিয়েছেন, সীমান্তের তম্ব্রু থেকে চাকঢালা হয়ে লেম্বুছড়ি পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার সীমান্তে গতকাল থেমে থেমে ভারী অস্ত্রসহ সাঁজোয়া যান চলাচল করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জননিরাপত্তা সম্পর্কে বিজিবি বারবার আশ্বস্ত করা সত্ত্বেও সীমান্তের কাছাকাছি এলাকাগুলো থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া লোকদের মধ্যে বসতবাড়িতে ফেরার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
বিজিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ মে দোছড়ি সীমান্তের পাইনছড়া সীমান্তে বিজিবির নায়েক মিজানুর রহমান মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। ৩০ মে তাঁর লাশ ফেরতের কথা বলা হলেও পতাকা বৈঠকের জন্য অপেক্ষারত বিজিবি সদস্যদের ওপর আবার হামলা ঘটনা ঘটে। তখন দুপক্ষের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা গোলাগুলি হয়। ফেরত দেওয়ার পর গত সোমবার মিজানের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
গোলাগুলির ঘটনায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুই বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠেয় পতাকা বৈঠক নিয়ে অচলাবস্থা এখনো কাটেনি। প্রথমদিকে সাড়া দিলেও গত তিন দিন ধরে বৈঠক বিষয়ে বিজিপি কোনো কথা বলছে না।